ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনকে মাঠ, পার্ক-র অপারেটর নিয়োগ চুক্তি বাতিল এবং দখলদার উচ্ছেদ করে নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আহবান জানিয়েছে পরিবেশবাদী ২৪ টি সংগঠন। বক্তারা বলেন, রাজধানীতে মানুষের জন্য নেই পর্যাপ্ত মাঠ। যে কতিপায় মাঠগুলো আছে, তা বিভিন্ন বাণিজিক ক্লাব নানাভাবে দখল করে নিচ্ছে এবং মাঠে স্থায়ী অবকাঠামো বানাচ্ছে। যার মধ্যে শহীদ তাজ উদ্দিন স্মৃতি পার্ক এবং ধানমন্ডি মাঠ অন্যতম। রাষ্ট্রের টাকায় মাঠ, পার্ক তৈরি হচ্ছে, অথচ সেই মাঠ কয়েকজন ব্যক্তি কোম্পানির নামে দখল করে বানিজ্য করছে। এ সকল মাঠের সদস্যপদ বিক্রি হচ্ছে । যা চরম অনিয়ম এবং দুনীতি। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো আজ বিকাল ৩ টায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সামনে এক মানববন্ধন হতে এ অভিমত ব্যক্ত করা। সভায় হেলাল আহমেদ, প্রফেসর আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার, সৈয়দা রতনা, নয়ন সরকার, মেজবাহ সুমন, আমিনুল ইসলাম বকুল, অরুপ দত্ত, তৈয়ব আলী, হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, ইবনুল, সাইদ রানা, আজীম খান, ফারহানা জামান, মাহবুবুল করিম বাচ্চু, সগুফতা সুলতানা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, রাজউক, আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে মাঠ, পার্ক দখলের প্রকৃত উদাহরণ গুলশান ১০৩/১০৯ নম্বর রোডে শহীদ তাজ উদ্দিন স্মৃতি পার্ক। মাঠ, পার্ক, জলাধার আইন ২০০০-র ধারা-৫ অনুসারে মাঠ, পার্ক ভাড়া, ইজারা বা অন্য কোনভাবে হস্তান্তর করা যাবে না। এ পার্ক ইতিপুর্বে একাধিকবার বেআইনভাবে ইজারা প্রদান করা হয়, যার প্রেক্ষিতে আদালতে মামলা হয় এবং মাঠটি ভাড়া ইজারা না দিতে আদালতে নির্দেশনা প্রদান করে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন আদালতের নির্দেশনা পালণ না করে, পার্কটি ব্যবস্থাপনার জন্য ইয়ুথ ক্লাবকে অপারেটর হিসেবে নিয়োগ দেয়। ক্লাবটি মাঠে মাষ্টার প্লান লঙ্ঘন করে অবকাঠামো নির্মাণ করছে এবং নিজেদের সম্পদের পরিণত করেছে। উল্লেখ যে, এ সময় মোট পাচটি মাঠ বিভিন্ন কোম্পানি/প্রতিষ্ঠানের হাতে অপরেটারের নামে তুলে দেয় এবং যাতে সাধারণ মানুষের প্রবেশ বন্ধ হয়। বছরের পর বছর অভিযোগ দিলেও কোন সরকারী সংস্থা কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
বক্তারা শহীদ তাজ উদ্দিন স্মৃতি পার্কসহ সকল মাঠ পার্ক হতে অবৈধ স্থাপনার উচ্ছেদ, মাঠ ও পার্কে সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং প্লান অনুসারে খেলা মাঠ ও পার্কে রুপান্তন। মাঠটি নাগরিকদের জন্য উম্মুক্ত করা, মাঠ দখল করে ক্লাবের ব্যবসার স্বার্থে অবৈধ ফুটবল টাফ অপসারণ, কমিউনিটি ভবনে লাইব্রেরী ও নাগরিকদের বসার জায়গা করার দাবি জানান।
বক্তারা দীর্ঘ মেয়াদে মহানগরীর মাঠ, পার্ক, জলাধার সংরক্ষন আইন সংশোধন করার লক্ষ্যে অর্ডিনেন্স প্রণয়নে দ্রুত একটি কমিটি করা, মাঠ ও পার্ক ব্যবস্থাপনার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন, দেশের সকল মাঠ ও পার্ক-র তালিকা প্রণয়ন এবং মাঠ, পার্ক সংরক্ষন ও ব্যবস্থাপনার জন্য অর্থায়ন করার দাবি জানান। সভা শেষে মাঠ পার্ক রক্ষায় একটি লিখিত স্মারকলিপি সিটি কর্পোরেশনের নিকট জমা দেয়া হয়।
উক্ত প্রতিবাদটি পবা, এইড ফাউন্ডেশন, আর্থ ফাউন্ডেশন, বারসিক, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ, বিসিজিডি,ক্যাপস, সিএলপিএ ট্রাস্ট, সিটিজেন নেটওয়ার্ক, ছায়াতল বাংলাদেশ, ডাস্, ডিডিপি, গ্রীনফোর্স, কেএইচআরডিএস, মাস্তুল ফাউন্ডেশন, নাসফ, এনডিএফ, প্রাণ প্রকৃতি পরিবেশ প্রতিবেশ রক্ষা জাতীয় কমিটি, তেঁতুলতলা মাঠ বাঁচাও আন্দোলন, প্রত্যাশা মাদক বিরোদী সংগঠন, ডাব্লিউবিবি ট্রাষ্ট, মাস্তুল ফাউন্ডেশন, পরিবেশ বীক্ষনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজন করা হয়।