ধূমপান ও তামাক ব্যবহার জনস্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। ধূমপান ও তামাক ব্যবহার হতে জনগণকে রক্ষা করা রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। বাংলাদেশ সংবিধানের ১৮ (১) অনুচ্ছেদে জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতির সকল পণ্য নিষিদ্ধের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে প্রদান করা হয়েছে। ধূমপান নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সরকার আইন প্রণয়ন করেছে। কিন্তু এ আইনের নানা সীমাবদ্ধতার কারণে আইনের বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এ জন্য আইনটির সংশোধন জরুরি। আজ পাবলিক হেলথ লইয়ার্স নেটওয়ার্ক প্রেরিত এক বিবৃতিতে নেটওয়ার্কের সদস্য-সচিব নিশাত মাহমুদ এ দাবি জানান।
তামাক নিয়ন্ত্রণ ব্যবহার কমিয়ে আনতে মহামান্য আপীল বিভাগ সিভিল আপীলনং ২০৪-২০৫/২০০১; ০১/০৩/১৬ এক রায়ে বাংলাদেশে যৌক্তিক সময়ে তামাক ব্যবহার কমিয়ে আনতে নির্দেশনা প্রদান করেছে। একই রায়ে দেশে তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের নতুন কোন কোম্পানি অনুমোদন না প্রদান এবং বিদ্যমান তামাক কোম্পানিগুলো অন্য দ্রব্য উৎপাদনের সহযোগিতার নির্দেশনা প্রদান করেছে। এছাড়া একই রায়ে ধূমপানমুক্ত স্থানে ধূমপানের জন্য ব্যবস্থা না রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেছে।
জনস্বাস্থ্য আইনজীবী হিসেবে আমরা গভীর উৎকন্ঠার সাথে লক্ষ করছি দেশে বিদ্যমান ধূমপান নিয়ন্ত্রণ আইনের সীমাবদ্ধতার কারণে প্রচুর বিজ্ঞাপন হচ্ছে, রেষ্টুরেন্টগুলোতে ধূমপানের স্থান তৈরি হচ্ছে, ই-সিগারেট মতো ক্ষতিকর পণ্য প্রসারের লক্ষ্যে কাজ করছে কতিপয় গোষ্ঠী কাজ করছে। যা বাংলাদেশ সংবিধান এবং আপীল বিভাগের নির্দেশনার পরিপন্থি।
তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের কারণে প্রতিবছর ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়। দেশে অসংক্রামক রোগের কারণে ৭০% মৃত্যু হয়। আর অসংক্রমাক রোগের অন্যতম প্রধান কারণ তামাক ব্যবহার। তামাক ব্যবহার দেশে ফুসফুস ক্যান্সার এবং মুখের ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ। তামাক ব্যবহারজনিত রোগের চিকিৎসা ব্যয় ২০১৮ সালেই হয়েছে ৩০৫৭০ কোটি টাকা। এ বিশাল ক্ষতি হতে নাগরিকদের রক্ষায় আপীল বিভাগের নির্দেশনা প্রতিপালন জরুরি। ধূমপানের ক্ষতি হতে তরুণদের বিরত রাখতে এবং অধূমপায়ী বিশেষ করে নারী ও শিশুদের রক্ষায় সরকার আইন সংশোধনের মাধ্যমে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা।