আবুল কাশেম : 

মাদক ব্যবসা খুন খারাবি নো ম্যাটার বা কোনো ব্যাপারই না মিরপুরের একটি  কিশোর গ্যাংয়ের কাছে। এই বাহিনীর গ্যাং লিডার হচ্ছেন মাস্টারের পোলা নামে খ্যাত সজীব। সজবী বাহিনী এখন মিরপুরের আতঙ্ক। পুলিশ অনেকটা নিষ্ক্রীয় থাকার কারনে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এই কিশোর গ্যাংটি।  

সম্প্রতি রাজধানীর মিরপুর শাহ্ আলী থানা ও দারুসসালাম থানা এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মা ও দুই ছেলের উপর অতর্কিত হামলা চালায়  সজীব বাহিনী ।  এ ঘটনায় দারুসসালাম থানার মামলায় আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে সাহাদাত শিকদার শাওন’কে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তবুই এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে পুরো মিরপুর এলাকায়।

ঘটনাসুত্রে জানাযায়, শাহ আলী মাজার এলাকার মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ সহ মাজার এলাকার যত মাদক ব্যবসায়ী আছে তাদের কাছ থেকে টাকা কালেকশন করেন সজীব বাহিনীর অন্যতম সদস্য মিলন, সে নিজেও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বলে জানা যায় । 

ঘটনার বেশ কিছুদিন আগে ভুক্তভোগী সালমার কাছ থেকে সজীব ও তার বাহিনী মিলে প্রায় ৪০হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়, সালমা ও তার ছেলে জীবন এর প্রতিবাদ করলে সরাসরি তাদেরকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় সজীব ও তার বাহিনী। এরপর থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে সালমা ও তার দুই ছেলেকে হয়রানি করে আসছে সজীব ও তার বাহিনী, সেই ঘটনার সূত্র ধরেই গত ১৯ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১১ টায় শাহ আলী থানাধীন শাহ্ আলী মহিলা কলেজ মার্কেটের মেইন গেইটের সামনে কিশোর গ্যাং সজীব ও তার বাহিনী সালমা ও দুই ছেলের উপর অতর্কিত হামলা চালায়।

গত ৫ আগস্টের পর থেকে সজীব বাহিনী সন্ত্রাসী বাহিনীতে পরিণত হয়েছে, এর আগেও কিশোর গ্যাং বলে পরিচিত ছিল সজীব ও তার সঙ্গীরা।   চাঁদাবাজি মারামারি লুটপাট সহ শাহ আলী মাজার এলাকায় এমন কোন অপকর্ম   নেই যা এই বাহিনি কিরে না। 

ভিকটিম সালমা বলেন আমার ছেলে জীবনকে জানে মেরে ফেলার জন্য তাকে খুঁজছে এমন সংবাদ আমাদের কাছে এসেছে এবং যেখানে পাবে সেখানে মেরে দেবে । এমতাবস্থায় আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহিনতায় ভুগছি । শাহ আলী থানায় ও দারুস সালাম থানার দুটি মামলাও করেছি কিন্তু পুলিশ সজীব ও তার বাহিনীকে গ্রেফতার করছে না। মাজার এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা জানান সন্ত্রাসী সজীব ও তার বাহিনীর কারনে তারা এলাকায় ঠিকমতো ব্যবসা করতে পারছেনা । সজীব ও তার বাহিনীর নামে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে তারপরও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না কেন ? এমন প্রশ্ন জনমতে।

শাহ্ আলী থানার মামলার আসামী হলেন, মৃত সাহাবুদ্দিন মাষ্টারের ছেলে সজীব (৩৫), আল আমিনের ছেলে সোহেল (২৫), ইউসুফের ছেলে জাহিদ (২৫), বুলেট (২৭), দিলু (২৭), তোফায়েল (২৬), সাগর (২৫)।

দারুস সালাম থানার মামলার আসামীরা হলেন, আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে সাহাদাত শিকদার শাওন (২৪), মেহেদী (২০), রাকিব (২৫), মিলন ভান্ডারী (৪৫), জাহিদ (২১), সোহেল এলাইস কোবরা সোহেল (২২), সহ অজ্ঞাতনামা আরোও ৫/৬ জন।

দারুস সালাম থানার মামলা সূত্রে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জের ধরিয়া অবৈধ দলবদ্ধ হইয়া ২২ সেপ্টম্বর বিকাল অনুমানিক ৫ টার সময় দারুস সালাম থানাধীন দারুস সালাম মাধ্যমিক স্কুলের সামনে পাকা রাস্তার উপরে জীবন (২৬) কে ধারালো সুইস গিয়ার চাকু দ্বারা এলোপাথারীভাবে আঘাত করিয়া শরীরের বিভিন্ন জায়গায়  রক্তাক্ত ও গুরুত্বর জখম করে, জীবনের ডাক-চিৎকারে সেনাবাহিনীর টহলরত টিম উপস্থিত হইলে ১নং আসামী সাহাদাত শিকদার শাওন (২৪) কে আটক করে। 

বাকী আসামীরা পালিয়ে যায়,আসামীরা যাওয়ার সময় জীবনের নিকট থাকা নগদ-১০হাজার টাকা নিয়ে যায় এবং যাওয়ার সময় তাকে প্রাণনাশের হুমকী প্রদান করিয়া চলিয়া যায়। সেনাবাহিনীর টহল দলের সহায়তায় জীবনকে নিয়ে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করাই। পরবর্তীতে সেবাহিনীর টহল দল ১নং আসামী সাহাদাত শিকদার শাওন (২৪) কে আটক করে দারুস সালাম থানায় সংবাদ দিলে থানার এসআই  ইমরান হোসেন রাজু আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে যান।

এবিষয়ে দারুস সালাম থানার এস আই ইমরান হোসেন রাজু বলেন, একজনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।বাকিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।শাহ্ আলী থানার এস আই আবুল হাসান বলেন, এখনো পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।