Contact For add

Thu, Feb 1 2024 - 1:57:54 PM +06 প্রচ্ছদ >> অপরাধ

তিন কন্য সন্তানকে বিষ খাইয়ে মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টা, এক শিশুর মৃত্যুতিন কন্য সন্তানকে বিষ খাইয়ে মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টা, এক শিশুর মৃত্যু

তিন কন্য সন্তানকে বিষ খাইয়ে মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টা, এক শিশুর মৃত্যু

সঞ্জয় বিশ্বাস, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: আমি মারা গেলে আমার বাচ্চারা সকলের অযত্ন অবহেলায় বেঁচে থাকবে। কষ্টের শেষ থাকবে না। তাই আমার সঙ্গে তাদেরও নিয়ে যেতে চাই। এই দুনিয়া আমার কাছে এখন ভারী হয়ে উঠছে। আমি আর এই দুনিয়ায় থাকতে চাই না আমার মেয়েদেরও রাখতে চাই না। এত জ্বালাতন আর সহ্য করতে পারি না।এতে আমার শ্বশুর বাড়ীর লোকজনের কোন দোষ নেই। গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ কথাগুলো বলছিলেন পলি বেগম।গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে পারিবারিক কলহের জের ধরে তিন কন্যা সন্তানকে বিষ খাইয়ে নিজে বিষপান করে আত্মহত্যা চেষ্ঠা করে গৃহবধূ পলি বেগম। এ ঘটনায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেড় বছরের ছোট মেয়ে মীমের মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার(৩১ জানুয়ারী)সকালে গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই মেয়ে মারা যায়।গতকাল মঙ্গলবার(৩০ জানুয়ারী)বিকালে ওই গৃহবধূ সন্তানসহ বিষ পান করে।পলি বেগম গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার লঙ্কারচর গ্রামের টিটু মোল্লার স্ত্রী।মারাত্মত অসুস্তাবস্থায় ৮ বছরের মেয়ে আফসানা ও আড়াই বছরের আমেনাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নত চিকিতসার জন্য রেফার করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, দশ বছর আগে কাশিয়ানী উপজেলার লংকারচর গ্রামে হাবিবুর রহমান মোল্লার ছেলে টিটু মোল্যার সাথে একই উপজেলার খাগড়াবাড়ি গ্রামের শরিফুল শেখের মেয়ের পলি বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে তিনটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়া হলে শাশুড়ি সেকেলা বেগম পুত্রবধূ পলির বাবা শরিফুল শেখের একাধিক বিয়ে করা নিয়ে তার উপর মানষিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল।

মঙ্গলবার সকালে পলি তার শাশুড়ির উঠানে জ্বালানি (গাছের পাতা) শুকাতে দেয়। এ নিয়ে শাশুড়ি গালমন্দসহ পলির বাবার একাধিক বিয়ের (৯টি বিয়ে) বিষয় নিয়ে নানান বাজে মন্তব্য করতে শুরু করেন।

এতে মনোক্ষুন্ন হয় এক পর্যায়ে বিকালে বাড়ীতে থাকা বিষ তিন কন্যা সন্তান মাদ্রাসায় পড়ুয়া ৮ বছরের মেয়ে আফসানা, আড়াই বছরের আমেনা ও দেড় বছরের মীমকে পান করিয়ে নিজে বিষ পান করেন। পরে বিষয়টি টের পেয়ে পরিবারে লোকজন প্রথমে কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বুধবার সকালে দেড় বছরের ছোট মেয়ে মীমের মৃত্যু হয়। 

বিষ খাওয়ার বিষয় পলি বেগমের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, পলি বেগমের স্বামী টিটো মোল্লা বাড়িতে থাকেন না। মেয়েদের নিয়ে তিনি গ্রামে থাকেন। পলি বেগমের শাশুড়ি পলি বেগমকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সব সময় নির্যাতন করতে থাকে।

এ বিষয়ে পলি বেগমের স্বামী টিটু মোল্লা বলেন, আমি ঢাকাতে স্কয়ার কোম্পানিতে চাকরি করি। স্ত্রী তিন মেয়েকে নিয়ে বাড়ি থাকে। তার মা প্রায়ই স্ত্রীকে নির্যাতন করতেন স্ত্রী তাকে ফোনে বলতেন। কাল (মঙ্গলবার) মা তাকে নানানভাবে নির্যাতন করেছেন বলে ফোনে জানায়। আমি ঢাকা থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে দুপুরেই রওনা হই।পরে জানতে পারি আমার স্ত্রী তিন মেয়েকে বিষ খাইয়ে সে নিজেও খেয়েছে। ছোট মেয়ে মারা গেল। অন্য দুই মেয়ের কি হয় আল্লাহই জানে। আল্লাহ যেন আমার দুই মেয়েকে ও স্ত্রীকে সুস্থ করে দেন। 

গোপালগঞ্জের শেখ সায়রা খাতুন মেডিকেল কলেজের উপপরিচালক ডাঃ নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, গতকাল রাতে মা ও তিন মেয়ে শেখ সায়রা খাতুন মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়। এরমধ্যে ছোট্ট মেয়ের মৃত্যু হয়েছে, অন্য তিনজন চিকিৎসাধীন রয়েছে।তবে নির্দিষ্ট সময় ক্রম না করা পর্যন্ত বলা যাবে না তারা আশংকা মুক্ত।

 



Comments

Place for Advertizement
Add