স্বাধীনতাকামী মানুষের ওপর প্রতিশোধ নিতে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা আজও সোচ্চার বলে মন্তব্য করেছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ।রোববার (১৩ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে যুবলীগের উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে নিহত সব শহীদের স্মরণে কোরআন খতম, দোয়া, মিলাদ মাহফিল ও তবারক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে পরশ বলেন, বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নিঃশেষ করে দেওয়ার চেষ্টা ছিল ১৫ আগস্ট। সেই কারবালার ইতিহাসের মতো ভয়ংকর দৃশ্য, নির্মম এ ইতিহাস। পরিবারের এতগুলো সদস্যকে মেরে ফেলার পরও বাংলার অগণিত মানুষ আর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সমর্থন ভালোবাসার কারণে ধীরে ধীরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা আবার উঠে দাঁড়াতে পেরেছি, ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি। আমরা আবার জীবনসংগ্রামে শরিক হয়েছি আপনাদের নিয়ে। দেশের মানুষ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ত্যাগ-তিতিক্ষার কারণে। আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী যুবলীগ এমন একটি সংগঠন এদের ত্যাগ-তিতিক্ষা এবং ভালোবাসা না থাকলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা আমরা কোনো সান্ত্বনা পেতাম না। আমাদের সান্ত্বনা দেশের জনগণের ভালোবাসা এবং সমর্থন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সারাজীবনের সংগ্রাম দেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো, সেই চেষ্টা সেই সংগ্রামই শেখ হাসিনা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং আজীবন চালিয়ে যাবেন। আজ সেই ’৭৫ এর খুনিরা, যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল, দেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তারা কিন্তু আজও সোচ্চার। আজও তারা আমাদের আশপাশেই আছে। শেখ হাসিনা দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন, সেই কাজে ব্যাঘাত ঘটানোর জন্য তারা আজও সচেষ্ট। তারা চায় না আপনাদের উন্নত-সমৃদ্ধ জীবন, আপনাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাঙালি হিসেবে আত্ম-মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক। তাই তারা এখনো সচেষ্ট খুন, হত্যা, রাহাজানি, অগ্নিসন্ত্রাস, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের মাধ্যমে আপনাদের ভবিষ্যৎকে নস্যাৎ করার জন্য।

শেখ পরশ বলেন, আপনারা গত ৪৮ বছর আওয়ামী লীগের ওপর এবং আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রেখেছেন, সেই আস্থা আপনারা দয়া করে রাখবেন। তাহলে আমরা কখনই কুচক্রী মহলকে ভয় পাবো না। বরঞ্চ সত্যের জয় হবেই। আমরা দেশের মানুষের জন্য কাজ করি, সুতরাং আমাদের কোনো পিছুটান নেই। আমরা সবই হারিয়েছি, বঙ্গবন্ধুকন্যা তার বাবা-মাসহ ছোট ভাইদেরও হারিয়েছেন, তারপরও তিনি শোককে শক্তিতে পরিণত করে এগিয়ে চলেছেন, সেই হত্যাকাণ্ড তাকে তার নীতি-আদর্শ থেকে বিন্দুমাত্র টলাতে পারেনি। আপনারা শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখবেন। আগামী নির্বাচনে আপনাদের ভোটের মাধ্যমেই আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে এবং সেই নির্বাচনে জয়ের মাধ্যমেই আমরা ১৫ আগস্টের খুনিদের জবাব দেবো।

যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মঞ্জুর আলম শাহীন, ডা. খালেদ শওকত আলী, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. হাবিবুর রহমান পবন, মো. নবী নেওয়াজ, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, তাজ উদ্দিন আহমেদ, মো. জসিম মাতুব্বর, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, মো. রফিকুল আলম জোয়ার্দার সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম, ডা. হেলাল উদ্দিন, মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, মো. জহির উদ্দিন খসরু, আবু মুনির মো. শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, মশিউর রহমান চপল, অ্যাডভোকেট ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, ঢাকা মহানগর উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানাসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।