সৌদি আরবে অবস্থানরত অবৈধ বাংলাদেশি শ্রমিকদের দ্রুত দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যূলার বিষয়ক উপমন্ত্রী আলি বিন আব্দুর রহমান আল ইউসুফকে পর্যাপ্ত সুযোগ প্রদানের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন সৌদিস্থ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
রোববার (৬ আগস্ট) রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যূলার বিষয়ক উপমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে রাষ্ট্রদূত বলেন, যেসব বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীদের নামে কর্মক্ষেত্র থেকে পলায়নের মামলা (হুরুব) রয়েছে এবং আকামা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে এবং যারা দেশে ফেরার জন্য আবেদন করেছেন তাদের দেশে ফেরার জন্য ছাড়পত্র পেতে কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হয়। এসব অভিবাসীদের বেশিরভাগ কর্মহীন বেকার অবস্থায় দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে আর্থিক সংকটে পড়েন যা বিদেশে তাদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক হয়ে পড়ে।
এসব অবৈধ অভিবাসীদের দ্রুত বাংলাদেশে ফেরার সুযোগ প্রদানের জন্য রাষ্ট্রদূত সৌদি পররাষ্ট্র উপমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।
বৈঠকে সৌদি পররাষ্ট্র উপমন্ত্রীকে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, বাংলাদেশি অনেক কর্মী বিভিন্ন অভিযোগে সৌদি আরবে কারারুদ্ধ রয়েছে।
যেহেতু তারা তাদের পরিবারের উপার্জনকারী সদস্য, তাই কারারুদ্ধ এসব অভিবাসীর পরিবারগুলো বাংলাদেশে অনেক কষ্টে রয়েছে। যারা গুরুতর অপরাধের জন্য বন্দি নন এসব বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য সৌদি রাজকীয় ক্ষমা বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেন রাষ্ট্রদূত।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, উদার এবং শ্রমবান্ধব শ্রমিক নীতি হওয়ার পর বিদেশি শ্রমিকদের জন্য সৌদি আরব একটি আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে এজন্য আমরা সেীদি নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সৌদি আরবে কাজ করার প্রবণতা রয়েছে।
বর্তমানে অভিবাসী শ্রমিকদের মধ্যে বাংলাদেশি শ্রমিকের সংখ্যা সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি। এ সময় অভিবাসী শ্রমিকদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। যা প্রতি বছরের মতো এ বছর আয়োজিত যৌথ কমিশন সভায় উল্লেখ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়ন অংশ হিসেবে সৌদি আরব দক্ষ জনশক্তিকেই স্বাগত জানাবে তাই বাংলাদেশে আমরা আমাদের শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। সৌদি উপ-পররাষ্ট্র মন্ত্রী আলি বিন আব্দুর রহমান আল ইউসুফ বাংলাদেশি শ্রমিকরা কঠোর পরিশ্রমী ও তারা সৌদি অর্থনীতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন বলে মন্তব্য করেন। তিনি বাংলাদেশি শ্রমিকদের সমস্যাগুলো মনোযোগ সহকারে শুনেন ও তা আশু সমাধানের উদ্যোগ নেবেন মর্মে রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন।
রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারি বাংলাদেশে সৌদি দূতাবাসে কালচারাল এ্যাটাচে নিয়োগ প্রদানের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। যাতে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে আরও বেশি শিক্ষার্থী তাদের কাগজপত্র দ্রুত সত্যায়িত করে সৌদি আরবে আসতে পারে। এছাড়া দক্ষ ও প্রফেশনাল অভিবাসী যারা সৌদি আরবে আসতে ইচ্ছুক তাদের সনদ দ্রুততার সঙ্গে সত্যায়িত করার জন্য সৌদি দূতাবাসে একজন কালচারাল এ্যাটাচে নিয়োগের অনুরোধ জানান রাষ্ট্রদূত।
বৈঠকে সৌদি আরবে ২৮ লাখ বাংলাদেশির কর্মসংস্থানের জন্য সৌদি বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ এবং যুবরাজ প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রদূত।