হলি টাইমস রিপোর্ট :
কথা সাহিত্যক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাসগৃহকে কেন্দ্র করে ‘শরৎ অরণ্য’ তৈরি পরিকল্পনা করছে হাওড়া জেলা পরিষদ। এলাকায় পর্যটনকে আকর্ষণীয় করে তুলতে চায় হাওড়া জেলা পরিষদ।তবে এর জন্য নির্দিষ্ট প্রকল্প তৈরি করে তা পাঠানো হয়েছিল রাজ্য সরকারের পর্যটন দপ্তরের কাছে। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, ধাপে ধাপে পাঁচ কোটি টাকা এই কাজের জন্য জেলা পরিষদকে দেবে রাজ্য। প্রশাসন সূত্রে খবর, শীঘ্রই ওই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। রূপনায়ারাণ নদের পাড়ে এর জন্য ছ’বিঘা জমি ইতিমধ্যে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। সেখানে গড়ে তোলা হবে ‘শরৎ অরণ্য’। প্রাথমিকভাবে জেলা পরিষদ ১০ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছে ওই জমির চারপাশে পাঁচিল দেওয়ার জন্য। এখানে শরৎচন্দ্রের বাড়ি থেকে সামান্য দূরেই রূপনারায়ণ নদ। শীতের মরশুমে শরৎবাবুর বাড়ি দেখার টানেই বহু মানুষ আসেন।
আগামীদিনে প্রকৃতি পর্যটন হিসেবে কলকাতার বেশ কাছে এই জায়গাটিকে আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা হলে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও উপার্জনের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে বলে আশাবাদী সরকারি কর্তারা। খবর:বর্তমান
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়ার গড়চমুকু-গাদিয়াড়া যাওয়ার জন্য সরাসরি ট্রেন নেই। উলুবেড়িয়া নেমে সড়কপথে অনেকটা যেতে হয়। কিন্তু দেউলটি স্টেশনে নেমে কিছুটা গেলেই সামতাবেড়ে, পানিত্রাস চলে যাওয়া যায়। তাই পর্যটনের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে এই জায়গায়। তাই জেলা পরিষদ এমন উদ্যোগ নিয়েছে। জানা গিয়েছে, এখানে নির্দিষ্ট জমির মধ্যে প্রচুর গাছ লাগানো হবে। এমন গাছই লাগানো হবে, যাতে পাখি এসে বসবাস করতে পারে। তৈরি হবে ছোটদের জন্য পার্ক। রূপনারায়ণের পাড় ধরে সৌন্দর্যায়ন হবে এবং প্রয়োজনে কোথাও কোথাও বাঁধানো হবে। নদী, গাছপালা, পাখপাখালি—এই তিনের সহাবস্থানে এখানে গড়ে তোলা হবে প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র। হাওড়া জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য বলেন, ওই জায়গায় এমনিতে বহু মানুষ যান। আমরা তাঁদের জন্য আরও সুন্দর ব্যবস্থা করে দিতে পারলে মানুষ আরও বেশি সংখ্যায় যাবেন বলে আশা করছি। এর জন্য রাজ্য সরকারের পর্যটন দপ্তর পাঁচ কোটি টাকা দেবে। বাগনানের বিধায়ক অরুণাভ সেন বলেন, এখানে সরকারি উদ্যোগে সুন্দর ব্যবস্থা করার জন্য অনেকদিন থেকেই উদ্যোগ নিয়েছি। অবশেষে কাজ শুরু হতে চলেছে। নদীর পাড়ে জমি চিহ্নিত করে তা পাঁচিল দিয়ে ঘেরার কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। তিনি জানান, এখানে প্লাস্টিক ও থার্মোকল নিষিদ্ধ থাকবে। চড়ুইভাতির নামে এলাকা নোংরা করা, মদ্যপান বা অন্য কোনও নেশা ইত্যাদি এখানে করতে দেওয়া হবে না। এখানে রূপনারায়ণ অনেকটা প্রশস্ত। তাই পাড়ে বসে থাকতেও ভালো লাগবে মানুষের। সময় কাটানোর ভালো জায়গা হিসেবে গড়ে তোলা হবে জায়গাটি। জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, শরৎবাবুর বাসগৃহকে কেন্দ্র করে এমন পরিকল্পনা নেওয়া হলেও সরাসরি প্রকল্পের অধীনে থাকছে না সেই বাড়ি। বেশ কয়েকবার বাড়ির বর্তমান মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনার পরও ওই বাড়ি অধিগ্রহণ করতে পারেনি সরকার। ফলে শরৎবাবুর বাড়ি যেমন আছে, তেমনই থাকবে। সেটিকে কেন্দ্র করে কাছেই গড়ে উঠবে ‘শরৎ অরণ্য’।