Contact For add

Thu, Sep 5 2019 - 5:14:00 PM +06 প্রচ্ছদ >> শিল্প সাহিত্য

His performance is still in the eyeতাঁর অভিনয় এখনো চোখে লেগে আছে

তাঁর অভিনয় এখনো চোখে লেগে আছে
হলি টাইমস রিপোর্ট: 
শহিদ কবির। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী। বাংলাদেশ, কানাডা ও স্পেন—বর্তমানে এই তিন দেশে ঘুরেফিরে বসবাস করছেন তিনি। এ শিল্পী বলেছেন প্রিয় ৫ বিষয়ে।
১. প্রিয় নায়িকা
নার্গিস এবং নার্গিস
এক বাক্যে বলব নার্গিসের কথা। আমার মতে, নায়িকাদের মধ্যে নার্গিস ছিলেন সবচেয়ে আকর্ষণীয়। তাঁর দেহসৌষ্ঠবও অসাধারণ। মুখটি ওভালের মতো, ওভাল গড়নটি সব সময় আমার প্রিয়। নার্গিস যখন স্মিত হাসি দিতেন, সেটি ছিল ভুবন ভোলানো—খুবই ভালো লাগত। তাঁর অভিনীত দিদার ছবিটির কথা মনে পড়ে। তাঁর অভিনয় এখনো চোখে লেগে আছে। 
২. প্রিয় শিল্পী
টুনটুন বাউলের গলায় লালনের গান
গান ছাড়া আমি বাঁচতে পারি না। যখন ছবি আঁকি তখনই গান শুনি। আমার প্রিয় শিল্পী টুনটুন বাউল। তাঁর গলায় লালনের গান কী যে অকৃত্রিম! টুনটুন বাউলের সঙ্গে আমার পরিচয়ও হয়েছে। তখন জেনেছি যে তিনি ট্রাকচালক, তবে গানে তাঁর নিষ্ঠা অসাধারণ। আসলে লালন সাঁইয়ের গান আমার খুব প্রিয়। লালন নিজে একজন দার্শনিক। জীবন ও সমাজকে তিনি নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করেছেন। ‘সুন্নত দিলে হয় মুসলমান/নারী জাতির কী হয় বিধান’—কী অসাধারণ উপলব্ধি, তাই না? স্বাধীনতার পরপর আমি কুষ্টিয়ায় লালনের আখড়ায় গিয়েছিলাম। তখন থেকেই লালনে মোহিত আমি। লালনের গান ও তাঁর দর্শনের ওপর ভিত্তি করে এগ টেম্পেরা দিয়ে বেশকিছু ছবি এঁকেছিলাম। ১৯৮০ সালে জয়নুল গ্যালারিতে তার প্রদর্শনীও হয়েছিল। প্রথম যখন লালন শুনি তখন ভালো লাগত ফরিদা পারভীনের গান। আর এখন টুনটুন বাউলই আমাকে মুগ্ধ করেন।
৩. প্রিয় চলচ্চিত্র
ভালো লাগার ছবি ‘গুড উইল হান্টিং’
আমার চলচ্চিত্র দেখা শুরু হয়েছে সপ্তম শ্রেণী থেকে। তখন স্কুল পালিয়ে ছবি দেখতাম, সপ্তাহে দু–তিনটি। প্রথম দিকে দেখতাম সব ভারতীয় ছবি। প্রথম বাংলাদেশের ছবি দেখেছিলাম সুতরাং। তবে আমার প্রিয় একটি চলচ্চিত্রের কথা বলতে হলে বলব, গুড উইল হান্টিং সিনেমার কথা। গাস ভেন সেন্ট পরিচালিত এবং ১৯৯৭ সালে নির্মিত আমেরিকান এই ছবিটি প্রথম আমাকে দেখতে বলেছিল আমার মেয়ে লাবিবা কবির। ও তখন ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোতে পড়ত। ওদের ক্যাম্পাসে শুটিং হয়েছিল ছবিটির। এ সিনেমার কাহিনিটি এত অপূর্ব যে আপনি চোখ ফেরাতে পারবেন না। আর রবিন উইলিয়ামস, বেন অ্যাফ্লেক প্রমুখ অভিনয়শিল্পীর অভিনয়ের কথা কী আর বলব—এত বছর পরেও মনে আছে।
৪. প্রিয় চিত্রকর
হৃদয়ের শিল্পী ভ্যানগঘ
আমার প্রিয় চিত্রকর ভিনসেন্ট ভ্যানগঘ। পৃথিবীতে কোনো শিল্পী যদি রক্ত, মাংস হৃৎপিন্ডকে রঙের সঙ্গে মিশিয়ে ছবি এঁকে থাকেন, তিনি ভ্যানগঘই। তাঁর ছবির বিষয়বস্তু মাটির খুব কাছাকাছি। এই ডাচ শিল্পী কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিল্পশিক্ষা গ্রহণ করেননি, তাই তাঁর ছবির ব্যাকরণগত ভুল হয়তো খুঁজে বের করা যাবে, কিন্তু ভ্যানগঘের চিত্রে অনুভবের প্রগাঢ়তা এত বেশি যে এসব খামতি নিমেষেই উতরে যায়। আসলে ভ্যানগঘের প্রতিটি ছবিই আবেগের উচ্চাঙ্গ তারে বাঁধা। তাঁর আঁকা আমার সবচেয়ে প্রিয় ছবি ‘পটেটো ইটারস’। রাতের এই ছবিটিতে চোখ রাখলে বোঝা যাবে একজন শিল্পী কতটা ‘ডাউন টু আর্থ’—মাটির কাছাকাছি থেকে আঁকতে পারেন।
৫. প্রিয় বই
‘বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী’
সত্যি বলতে, বইপত্র তেমনভাবে পড়া হয় না আমার। একটা বই পড়তে শুরু করলে আমি বইটির প্রথম পাতা পড়ি আর শেষ পাতা পড়ি। আসলে বইকে আমি ছবির মতো করে দেখতে চাই। গানের মতো করে শুনতে চাই। তো, একটি প্রিয় বইয়ের কথা বলতে হলে আমি অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলীর কথাই বলব। যখন আর্ট কলেজে (বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ) পড়তাম, তখন এ বইটি পড়েছিলাম। পড়েছিলাম বলা কি ঠিক হলো? আসলে শুনেছিলাম। আর্ট কলেজে আমার বছর কয়েকের সিনিয়র ছিলেন দেলোয়ার হোসেন। আমরা তাঁকে বলতাম দেলুভাই। তিনিই পড়ে পড়ে বইটি শুনিয়েছিলেন আমাকে। তখন এ বইয়ের কল্যাণে শিখেও ছিলাম অনেক কিছু। তবে আমার মনে হয়, পড়ে জ্ঞান হয় না, দেখার চোখ থাকতে হয়। #  


Comments