প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন বাংলাদেশের তিস্তা প্রকল্প নিয়ে ভারত ও চীন দুই দেশেরই আগ্রহ আছে। তবে, তিনি চান তিস্তা প্রকল্প ভারতই বাস্তবায়ন করুক। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীন-ভারত দুই দেশই আমাদেরকে প্রস্তাব দিয়েছিল। এরই মধ্যে চীন সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে। ভারতও সম্ভাব্যতা যাচাই করবে। দুই দেশের সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে যেটা আমাদের জন্য যুক্তিযুক্ত হবে আমরা সেটা নেবো। তবে আমি এখানে ইন্ডিয়াকে বেশি প্রাধান্য দেবো যে এটা ইন্ডিয়াই করুক। কারণ তিস্তার পানিটা ইন্ডিয়া আটকে রেখেছে। তাদের কাছ থেকে যদি আমাদের আদায় করতে হয় তাহলে এই প্রজেক্টের কাজ তাদেরই করা উচিত। তারা প্রজেক্ট করলে যখন যে প্রয়োজন হবে তা তারা দেবে। এটা তো একটা ডিপ্লোমেসি। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন রেডি, কিন্তু আমি চাচ্ছি এটা ইন্ডিয়া করে দিক।
প্রধানমন্ত্রী আরো জানান, পদ্মার ওপারের আমাদের দক্ষিণবঙ্গ সব থেকে বেশি অবহেলিত। কাজেই এই দক্ষিণ অঞ্চলের ডেভেলপমেন্টের জন্য আমি চীনকে বলেছি। সবথেকে অবহেলিত হওয়ায় ওখানকার কাজগুলো করা কঠিন। কচা নদীর ওপরে একটা সেতু দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা, ওটা চীন করে দেবে।
তিনি বলেন, আমি সবাইকে ভাগ করে দিয়ে দিছি, কাকে কোথায় দিলে আমার কঠিন কাজ সহজভাবে হবে, ঠিকমতো কাজ করতে পারবো। সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়।
চীন সফর শেষে রোববার বিকেলে গণভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেছেন।
চীন সফর নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হলেও সাংবাদিকদের প্রশ্নে উঠে আসে তিস্তা প্রকল্প, কোটা বিরোধী আন্দোলন, সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের পেনশন কিংবা প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়গুলোও।
কোটা আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন, কোটা সমস্যার সমাধান আদালতেই হবে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বাধা দেয়া হবে না, তবে কেউ ধংসাত্নক কর্মকাণ্ড চালালে আইনি ব্যবস্থা নেবে আইনশৃংখলা বাহিনী।
শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কথা বলা হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা প্রশ্ন তোলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কথা বলার অধিকার তাদের কে দিয়েছে?
কেউ কেউ মুক্তিযোদ্ধার নাতি হিসেবে কোটায় ভর্তি হয়ে এখন কোটার কেন আন্দোলন করছে বলে প্রশ্ন রাখেন শেখ হাসিনা।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি পুতিরা কোটা পাবে না তো রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে?
তবে এই আন্দোলনে কোনো মহল ইন্ধন দিচ্ছে কী না সেটি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে প্রধানমন্ত্রী কোনো জবাব দেননি।
যদিও গত কয়েকদিনে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রীরা বলে আসছেন কোটা বিরোধী আন্দোলনে বিএনপির ইন্ধন রয়েছে। সূত্র: বিবিসি