সঞ্জয় বিশ্বাস; গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি :
জমি জমা সংক্রান্ত বিরেধের জেরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় প্রতিপক্ষের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে আক্রান্ত পরিবারের ৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৩ জন হাসপাতালে রয়েছে। হামলার সময় বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র দিয়ে বসতবাড়ী তছনছ ও ভাংচুর করা হয়। এর ফলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে আক্রান্ত পরিবারটি। সোমবার রাতে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কাকইবুনিয়া গ্রামের এ ঘটনা ঘটে।
ভূক্তভোগীরা জানান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কাকইবুনিয়া গ্রামের মিলন কান্তি রায়ের সাথে প্রতিবেশি গোবিন্দ রায়ের মধ্যে জমি জমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জের ধরে সোমবার রাতে গোবিন্দ রায় ও তার লোকজন মিলন কান্তি রায়ের উপর হামলা চালায়। এসময় মিলন কান্তি রায় (৫০) কে কুপিয়ে আহত করা হয়।হামলার সময় বাঁধা দিতে গেলে তার স্ত্রী, ভাই মা ও দুই ছেলে-মেয়েকে পিটিয়ে আহত করে। এসময় হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাড়ি ঘর কুপিয়ে তছনছ করে ও ভাংচুর করে। মারাত্মক আহত মিলন কান্তি রায়কে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত মিলনকান্তি রায় (৫০) বলেন, প্রতিপক্ষ গোবিন্দ রায় দীর্ঘদিন আমার পৈত্রিক বাড়ির ৩ শতাংশ ছেড়ে দেয়ার জন্য হুমকি দিয়ে আসছিলো। সোমবার আমার ছোট ভাই কিশোর রায় (৩০) বাড়িতে আসলে তাকে জঘন্য ভাষায় গালাগালি করে। সে প্রতিবাদ করলে গোবিন্দ রায় (৪০) এর নেতৃত্বে তার ছেলে আকাশ রায় (১৮), কাকাতো ভাই বিশ্বজিৎ রায় (২৩), সুশান্ত রায় (৩৫), সুবল সিকদার (মার্ডার কেসের অসামী ) , আনন্দ রায় ( ১৭), ১ম স্ত্রী ববিতা রায় (৩৫), ২য় স্ত্রী রিয়া রায় (৩৪), সুশান্ত রায়ের স্ত্রী রত্না রায় (২১) সহ ১৫-১৬জন সংঘবদ্ধভাবে রাম দা, ছুড়ি, কাস্তেসহ লাঠিসোটা নিয়ে কিশোর রায় উপর হামলা করে। তারা কয়েকজন আমাদের ঘরে রামদা দিয়ে কোপানো শুরেু করে এবং অন্যরা কিশোর রায়কে বেধরক পেটায়। আমরা ভয়ে ঘরের মধ্যে আশ্রয় নেই। আমার কিশোর মার খেয়ে দৌড়ে পালালে ওরা ঘরের দরজা ভেঙ্গে আমাকে, আমার স্ত্রীর, দুই ছেলে মেয়ে এবং আমার বৃদ্ধ মাকে আক্রমণ করে। আমাকে ধারালো আস্ত্র দিয়ে কোপ মারে। ধারালো অস্ত্রের কোপে আমি রক্তাক্ত হয়ে অজ্ঞান হয়ে যাই। আমার স্ত্রী কোপ ঠেকাতে গেলে তোর মাথায় বাড়ি মাড়ে। আমার মেয়ে এবং মাকে বেদম প্রহার করে। আমার বৃদ্ধ মাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। আমার ১২ বছরের ছেলে খাটের নিচে লুকালে তাকে খাটের নিচ থেকে টেনে বের করে মারা হয়েছে। আমরা এখন অসহায় বোধ করছি।
মিলন কান্তি রায়ের স্ত্রী সুবর্ণা বালা (৪৪) বলেন, গোবিন্দ রায় ( ৪০ ), ছেলে আকাশ রায় (১৮), কাকাতো ভাই বিশ্বজিৎ রায় (২৩) সুশান্ত রায় (৩৫) ( সুবল সিকদার র্মাডার কেসের অসামী ) , আনন্দ রায় ( ১৭), ১ম স্ত্রী ববিতা রায় (৩৫), ২য় স্ত্রী রিয়া রায় (৩৪),সুশান্ত রায়ের স্ত্রী রত্না রায় (২১) সহ ১৫ – ১৬ জন যেভাবে আমাদের ওপর হামলা করেছে এতে আমরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পরেছি। এখন তারা এখন তারা আমাদের প্রান নাশের হুমকি দিচ্ছে। বলছে বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে হামলা করা হয়েছে, সেভাবে তোদের মেরে তোদের কোন বংশধর রাখবো না। এর সুষ্ঠু সমাধান না হলে আমাদের ঘর-বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বাঁচতে হবে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
মিলন কান্তি রায়ের ভাই কিশোর রায় (৩০) বলেন, গোবিন্দ রায় এবং তার লোকজন আমাকে বেদম পিটিয়েছে। এখন হাসপাতাল থেকে ফিরলে আমার মাথা কেটে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমরা এখন অসহায় হয়ে পরেছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিলন রায়ের একজন প্রতিবেশি বলেন, স্থানীয় একজন প্রভারশালী জনপ্রতিনিধির ছত্রছায়ায় গোবিন্দ রায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। হেন অপকর্ম নাই সে করে না। এই হামলার পেছনেও সেই জনপ্রতিনিধির ইন্ধন রয়েছে।
এ ঘটনায় টুঙ্গিপাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।