বাজারে জিনিসপত্রের দামে আগুন। দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে গিয়েই শেষ হয়ে যাচ্ছে মাসের ইনকাম। ফলে নতুন পোশাক কেনা হয়ে উঠেছে বিলাসিতা। এ অবস্থায় সেকেন্ডহ্যান্ড বা পুরোনো কাপড় দিয়েই প্রয়োজনীয়তা মেটাচ্ছেন আর্জেন্টিনার নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষেরা।
দক্ষিণ আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ আর্জেন্টিনা। বিশ্বের অন্যতম কৃষিপণ্য রপ্তানিকারকও তারা। কিন্তু সম্প্রতি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে দেশটি। গত অক্টোবরে আর্জেন্টিনায় বার্ষিক মূল্যস্ফীতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ১৪৩ শতাংশ, যা বিগত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
এমন সংকটকালীন অবস্থায় আর্জেন্টাইনরা যেসব জিনিস বিসর্জন দিচ্ছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো পোশাক। দেশটির বহু মানুষ নতুন কাপড় কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। পরিবর্তে সেকেন্ডহ্যান্ড কাপড়ের দোকান থেকে কিনে অথবা আত্মীয়-বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে ধার করে কাজ চালাচ্ছেন।
অনেকেই পুরোনো ছেঁড়া কাপড় সেলাই করে আবার পরছেন। কেউ কেউ কাপড়ের আয়ু বাড়ানোর জন্য নিজেই সেলাই শিখছেন।
মন্দার হাতছানি
কাপড় ছাড়াও আর্জেন্টিনার অনেক মানুষ এখন খাদ্য, বিনোদন বা অন্যান্য অনাবশ্যক জিনিসপত্রের পেছনে খরচ কমিয়ে দিয়েছেন।
এ অবস্থায় স্থানীয় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কমে গেছে বেচাকেনা। ফলে আয়ব্যয়ের ভারসাম্য রক্ষায় কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে তারা।
বর্তমানে লাতিন আমেরিকান দেশটির পাঁচভাগের দুইভাগ মানুষই দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেছে।
বুয়েনস আয়ার্সে আইলেন চিক্লানা নামে ২২ বছরের এক শিক্ষার্থী বলেন, এখন আপনি শপিং মলে গিয়ে পছন্দ হয়ে যাওয়ায় হুটহাট কোনো কিছু কিনে ফেলতে পারবেন না, যেমনটি আগে করতেন। আজকাল জিনিসপত্রের দাম কল্পনাও করা যাচ্ছে না।
সেখানে এখন জিনসের নতুন একটি পোশাকের দাম এক বছর আগের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে উঠেছে।
৬২ বছর বয়সী বিট্রিজ লরিসিও পেশায় শিক্ষক। তার স্বামী একটি বাস কোম্পানির কর্মচারী। কিন্তু জিনিপত্রের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে দুজনের আয় দিয়েও সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। এ কারণে প্রতি সপ্তাহান্তে একটি মেলায় পুরানো পোশাক বিক্রি করতে যান এ দম্পতি।
লরিসিও বলেন, আমরা ব্রাজিলে বেড়াতে যাওয়ার জন্য এই কাজ করছি না। এটি করতে হচ্ছে দৈনন্দিন প্রয়োজনের তাগিদে। সূত্র: এনডিটিভি, রয়টার্স