Mon, Feb 28 2022 - 11:49:06 AM +06

রেলওয়ের গেইট কিপারদের চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আমরণ অনশন


News Image

হলি টাইমস রিপোর্ট:

 

বাংলাদেশ রেলওয়ের মান—উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পের ১৮৮৯ জন গেইট কিপারের চাকরি রাজস্ব খাতে স্থায়ীকরণের দাবিতে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও রেলপোষ্য এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে ১৮৮৯ জন গেইট কিপার রাজস্বকরণ বাস্তবায়ন ঐক্য পরিষদ পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চল’ এর উদ্যোগে কমলাপুর রেলওয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গতকাল শুরু হওয়া অনির্দিষ্টকালের আমরণ অনশন আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ সোমবার ২য় দিনেও মাথায় কাফনের কাপড় পড়ে অব্যাহত রেখেছেন গেইট কিপাররা।

গতকাল সকাল ১১:৩০ মিনিটে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, ঢাকা বিভাগের রেলওয়ে ম্যানেজার সহ রেলওয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তারা অনশন স্থলে এসে অনশন প্রত্যাহারের আহ্বান জানালেও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব অথবা বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেয়ার কোন সুর্নিদিষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত গেইট কিপাররা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল রাতেও তারা কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন। ইতিমধ্যে অনশনের কারণে ইতিমধ্যে গেইট কিপাররা অনেকেই অসুস্থ্য হয়ে পড়ছেন।

আজ সকালে অনশন স্থলে এসে গেইট কিপারদের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটির সভাপতি মোঃ মনিরুজ্জামান মনির। তিনি অবিলম্বে গেইট কিপারদের ন্যায্য দাবি—দাওয়া মেনে নিয়ে তাদেরকে অনিশ্চিত কর্মজীবনের ভোগান্তি থেকে রেহাই দিতে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানান।

কর্মসূচিতে গেইট কিপাররা বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের মান উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নং—৪৭০ ই/গেইট কিপার নিয়োগ/প্রকল্প/সিই পূর্ব—২০১৬ (ডব্লিউ) তারিখ: ৩১/১০/২০১৬ইং, বিজ্ঞপ্তি নং—এসেট ৬০১/৫ (নিয়োগ) প্রকল্প সিই/পশ্চিম ২০১৬ (ডব্লিউ) তারিখ: ১৫/১০/২০১৬ইং মোতাবেক ১৮৮৯ জন গেইট কিপার অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে নিয়োজিত আছি। এর মধ্যে ৫৭২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, ৫৫৫ জন রেলপোষ্য এবং ৩২৫ জন নারী গেইট কিপার রয়েছেন। ২০১৯ সালের ২৯ ডিসেম্বর একনেক সভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্পের কর্মরত গেইট কিপারদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করে চাকরি স্থায়ী করণে রেলপথ মন্ত্রণালয়কে জরুরী ভিত্তিতে উদ্যোগ গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন। কিন্তু রেলপথ মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত দৃশমান কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। আমরা রেলপথ মন্ত্রণালয়ে বহুবার স্মারকলিপি দিয়েছি, চিঠি দিয়েছি, আমাদের দুর্দশার কথা জানিয়েছি কিন্তু তারা আমাদের কোন কথায় কর্ণপাত করেনি।

তারা বলেন, নিয়োগের সময় গেইট কিপারদের বেতন নির্ধারণ করা হয় সর্বসাকুল্যে ১৪,৪৫০/— টাকা। বিগত ৫ বছরে এ বেতন বাড়েনি। বেশির ভাগ গেইটকিপার তাদের নিজ জেলা ব্যতীত অন্য জেলায় চাকরি করেন। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে বাসা ভাড়া, পরিবারের ভরণপোষণ, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া, চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে তাদের হিমশিম খেতে হয়। অপরদিকে প্রায় সকলের বয়স ৩২ বছর অতিক্রম করায় অন্য চাকরিতেও ঢোকার সুযোগ নেই। নং—মপবি/ক:বি:শা:/কপগ—১১/২০০১—১১, তারিখ: ০৩/০৫/২০০৩ ও নং—মপবি/ক:বি:শা:/মক—০১/২০০৩—২৮, তারিখ: ২২/০১/২০০৩ প্রজ্ঞাপন মূল্যে অস্থায়ীভাবে সৃজনকৃত পদ হইতে রাজস্ব খাতে প্রেরণ করা সম্ভব। অথচ আমাদের চাকরির মেয়াদ প্রায় ৫ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। তাই অবিলম্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে আমাদের চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তর করার জোর দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় আমাদের আমরণ অনশত অব্যাহত থাকবে। এতে কোন প্রকায় ক্ষয়ক্ষতি হলে তার দায় রেলপথ মন্ত্রণালয়কে নিতে হবে।

অনশন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন ঢাকা বিভাগের গেইট কিপার সুজন আহমদ, মোঃ আল মামুন, কাওছার, মাহাবুব আলম মাফুল, আলফাহাজ, চট্টগ্রাম বিভাগের জাবেদুল হক, মোঃ মাসুদুল ইসলাম, পাকশি বিভাগের রূপা পারভীন, কাজী পিয়াশ, সোহেল, ছোটন প্রমুখ।