Contact For add

Sat, Apr 25 2015 - 12:00:00 AM +06 প্রচ্ছদ >> বিশেষ খবর

Peace Practice Chindee Muraপ্রশান্তির তীর্থক্ষেত্র চন্ডী মুরা

প্রশান্তির তীর্থক্ষেত্র চন্ডী মুরা

 

সাগরিকা মন্ডল , বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা :

কুমিল্লা শহর ছেড়ে ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার দুরে,মেইন রোডের পাশেই অবস্থিত চন্ডী মুড়া। মেইন গেট থেকে তিন চার পা হাটলেই বিশাল সিঁড়ি,সিঁড়ির কেবলি উঠতে ডান পাশে ২-৩টা রকমারি দোকান।যেখানে পুজারসামগ্রী যেমন ধুপ,ধুপকাঠি,মোমবাতি,বাতাসা, চিনি,মিষ্টি জাতীয় নানা রকম জিনিস। তারপরই ১৪২ টা সিঁড়ির ধাপ পার হয়ে মন্দিরের দাড়।সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে চোখে পড়বে, এলোমেলো কাঁঠালগাছের সারি।আরো দেখতে পাবে, এ গাছ থেকে ও গাছে ঘুড়ে বেড়াচ্ছে কাঠবিড়ালি।

 

 সিঁড়ি বেয়ে যতই মন্দিরের দিকে উঠবে, ঠিক সেখান থেকে একটু পেছনে ঘুরে তাকালেই মনে হবে, তুমি কোন প্লেন থেকে নিচের ভুমিটাকে দেখছ।এরপর  সিঁড়ি বেয়ে উঠে মন্দিরের প্রবেশ  পথের ডান পাশে দেখতে পাবে শ্রী সুভাষ চন্দ সরকারের স্মরণ স্মৃতির উদ্দেশে কিছু লেখা,যার বাড়ি মাদারীপুর জেলার কদমবাড়ি গ্রামে।

একটু ভিতরে যেতেই দেখবে, বা দিকে লেখা আছে বহিরাগমন প্রবেশ নিষেধ।এর কেবলই ডানে অনেক খানিক ফাঁকা জায়গা, শুনেছি লাঙ্গল বন্দের মেলাতে এখানে দুর দুরান্ত থেকে কয়েক হাজার লোকের সমাগম ঘটে।তখন, এখানে তারা বিশ্রাম নেয়।এরপর আরো ৫-৬টি সিঁড়ির ধাপবেয়ে উঠেই কিছুটা ফাঁকা অংশ,যাকে মন্দিরের আঙ্গিনা বলে।

 

সিঁড়ির ঘরে ছাদের উপরের অংশে রয়েছে বিশাল নাট মন্দির।এ নাট মন্দিরে বসেই, পুজারির পুজা করা দেখা যায়।সামনের আঙ্গিনা,  পার হতে না হতেই মন্দির।একটি নয়, তা আবার দু'টি।একটি শিব মন্দির ওএকটি চন্ডী মন্দির। দু'টিরই আলাদা আলাদা অবস্থান। এ মন্দির দু'টির পাশ দিয়ে আবার প্রদক্ষিনের যথেষ্ট জায়গাও রয়েছে।৭ম শতাব্দিতে বৌদ্ধরাজ দেব খড়গের সহ ধর্মীনি প্রতীভা দেবী অমর কৃত্তী স্থাপনে বদ্ধ পরিকর হয়ে,২টি মন্দির  স্থাপন করেন।একটি শ্রী শী চন্ডী মন্দির ও শ্রী শ্রী শিব মন্দির। তিনি চন্ডী মন্দিরে অষ্টাভুজা সর্বানি মহা সরস্বতী ও শিব মন্দিরে দেবাদিদেব মহাদেব শিব কে স্থাপন করেন।মন্দিরের পিছনের অংশে কিছুটা অংশ টিনের ছাউনি দিয়ে ঢাকা।ওখানে মেলার সময় যখন বেশি লোকজন হয়, তখন প্রসাদ দেওয়া হয়।

 

মন্দিরের ডানে রয়েছে গীতা ভবন,শ্রীমত স্বামী আত্মানন্দ গিরি মহারাজ অধ্যক্ষ। যেখানে প্রতিদিন গীতা পাঠ ও অন্যান্য আলোচন হয়। এখানে আবার বিভিন্ন যজ্ঞানুষ্ঠানের পাশাপাশি, বিয়ের মত শুভ যজ্ঞ ও সম্পন্ন হয়।এ মন্দিরে ২জন পুজারি প্রত্যহ পুজাঅর্চনা করে,এছাড়া প্রধান দায়িত্ব কর্মী ছাড়াও ৮-১০ জন কর্মী এখানের সকল কাজের সমাধান সুষ্ট ভাবে সম্পন্ন করে থাকে।মেলার সময় টা এখানে যাতে কোন প্রকার ঝামেলা যাতে না হয়, তার জন্য করা নিরাপত্তার ব্যবস্থা ও এখানে আছে।সব থেকে বড় কথা মন্দিরটা যতটা উচুতে অবস্থিত,মন্দিরের পিছনে তার চেয়ে আরো অনেক উচুতে অবস্থান করছে এক বিশাল পাহাড়।যার অবস্থান, কুমিল্লার ১৩ থেকে ১৪ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে।মন্দির সহ মন্দিরের চারপাশের পরিবশটা এটই সুন্দরযে,হিন্দুদের পাশাপাশি অনেক মুসলমানরা ও এ জায়গাতে আসে। তাদেরই এক জন বলেছে,এখানে আসলে মনটা খুব ফ্রেস লাগে।মনে হয় এখানেই সারাবেলা কাটাই, তাই একটু সুযোগ পেলেই আমিওআমার বর এখানে আসি। সবপরি বলা যায়,ধর্মীয় স্থানের পাশাপাশি এটি একটি পর্যটন কেন্দ্রও বটে।হিন্দু ধর্মের অনেক অনেক বছর আগেকার পুরান মন্দির এটি, যার নমুনা মন্দিরের স্বারক লিপিতে পাওয় যায়।
ঢাকা থেকে যাবার উপায় :

সায়দাবাদ থেকে পদ্মা এক্সকুলেসিভ বাস যেটি  চাঁদপুর  হয়ে লালমাই শহরে যায়। এটা নন এসি বাস। ভাড়া ২২০ থেকৈ ২৪০ টাকা।

সেখান থেকে মাএ ৫ / ১০ টাকার পথ। লালমাই থেকে যে অটোগাড়ি গুলো বড়ুরা যায়,তাদেরই একটায় উঠে বললেই হবে চন্ডীমুড়া মন্দিরের কাছে নামব । ব্যাচ হয়ে গেল। গাড়ি থেকে নেমে সাবধানে রাস্তা পার হলেই দেখতে পাবেন মন্দিরের বড় গেটটি।সারা দিন মন্দির পরিদর্শন শেষে আবার বিকেলেই ফিরে আসা সম্ভব। মাত্র আড়াই থেকে তিন ঘন্টার পথ ঢাকা। স্বল্প খরচে শুধু বেড়ানোর আনন্দই নয় আপনি জেনে নিতে পারবেন অতিপ্রাচীণ ধর্মীয় কিছু্ উপাসনালয়ের ইতিকথাও।


 



Comments

Place for Advertizement
Add